প্রতিপক্ষ রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম টিভি বিতর্কের পর বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন। আর ক্ষোভে ফুঁসছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিউইয়র্কের হফস্ট্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্চে দুই নেতার সোমবার রাতের ওই বিতর্কে হিলারিই জিতেছেন বলে অধিকাংশ পর্যবেক্ষকের মূল্যায়ন।
বিতর্কে অংশ নেওয়ার পর হিলারি ক্লিনটন বিমানে নিউইয়র্কের ওয়েস্টচেস্টার কাউন্টি বিমানবন্দর থেকে নর্থ ক্যারোলাইনার র্যালেইয়ের উদ্দেশে যাত্রা করেন। বিমানবন্দরে এ সময় সমর্থকেরা হাততালি দিয়ে তাঁকে অভিনন্দন জানান। নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে নর্থ ক্যারোলাইনায় যান হিলারি। বিমানের পেছনের দিকে বসা সাংবাদিকদের কাছে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে হাস্যোজ্জ্বল হিলারি বলেন. সন্ধ্যাটি তাঁর ‘দারুণ, দারুণ, ’ কেটেছে।
হিলারি বলেন, ‘আমি বেড়ে ওঠার সময় অন্যতম প্রিয় বেসবল খেলোয়াড় ছিলেন আর্নি ব্যাংকস। তিনি খেলায় নামার সময় এতটাই উত্তেজনায় ভুগতেন যে বলতেন, “চলো দ্বিতীয় ম্যাচটা খেলা যাক এবার। ” সে রকমই আমি এখন পরবর্তী বিতর্কগুলোর অপেক্ষায় আছি।’
ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, বিতর্কের সময় তাঁকে একটি ত্রুটিপূর্ণ মাইক্রোফোন দেওয়া হয়েছিল। তাঁর অভিযোগের জবাবে ফোড়ন কেটে হিলারি বলেন, ‘যে লোক তাঁর মাইক্রোফোন নিয়ে অভিযোগ করেছেন, তাঁর রাতটা ভালো যায়নি।’
দৃশ্যত পরেরদিন সকালটিও ভালো কাটেনি ট্রাম্পের। ফক্স নিউজ এ মঙ্গলবার সকালে হিলারির সঙ্গে আগের দিনের বিতর্ক নিয়ে অভিযোগ তোলেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, সোমবারের বিতর্কের সঞ্চালক এনবিসির লেস্টার হল্ট তাঁর প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব দেখিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমাকে কয়েকটি বৈরিতাপূর্ণ প্রশ্ন করা হয়। (হল্ট) তাঁকে ইমেইল নিয়ে প্রশ্ন করেনইনি। তিনি হিলারিকে তাঁর কেলেঙ্কারি নিয়ে প্রশ্ন করেননি। তিনি তাঁকে বেনগাজি চুক্তি ভেস্তে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন করেননি। জিজ্ঞেস করা উচিত ছিল এমন অনেক কিছু নিয়েই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়নি। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।’
বিতর্কের পর এক জরিপে প্রতি দশজনের আটজন টিভি দর্শক বিতর্কে হিলারিকেই জয়ী হিসেবে দেখেছেন। অনেকে বলেছিলেন, এ ফলের কারণে ট্রাম্প হয়তো পরবর্তী বিতর্কে না-ও অংশ নিতে পারেন। তবে ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি বিতর্কে অংশ নেবেন এবং আরও বেশি আক্রমণাত্মক হবেন। আগামীবার তিনি ক্লিনটন পরিবারের দাম্পত্য সমস্যার বিষয়টি তুলে ধরতে পারেন বলে জানা গেছে।
হিলারি খোশমেজাজে থাকার আরও কারণ এই যে বিতর্কের পর তাঁর জনসমর্থন কিঞ্চিৎ হলেও বেড়েছে।
প্রথম বিতর্কে ট্রাম্পকে সহজেই ধরাশায়ী করার ফলেই সারা দেশে এ জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি। রাজনৈতিক ওয়েব পত্রিকা পলিটিকো গৃহীত এক জনমত জরিপ অনুসারে জাতীয় পর্যায়ে ট্রাম্পের তুলনায় ক্লিনটন এই মুহূর্তে তিন পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন।
ব্যক্তিগত কয়েকটি ইস্যুর বাইরে মার্কিন অর্থনীতি, বিশ্ব নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদের মতো বিষয়েও তারা তর্কে লিপ্ত হন । নিউইয়র্কের হফট্রা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বিতর্ক টেলিভিশন ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি দেখা বিতর্ক বলে ধারণা করা হচ্ছে। সারা বিশ্বে ১০ কোটিরও বেশি মানুষ অনুষ্ঠানটি সরাসরি দেখেছেন।
0 comments:
Post a Comment