Wednesday, October 05, 2016

‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের’ প্রমাণের দাবি জোরালো

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের এক ফাঁড়িতে সতর্ক পাহারায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এক সদস্য। জায়গাটি ভারতীয় পাঞ্জাবের গুরুদাসপুর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে l এএফপি

পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গত বৃহস্পতিবার ভারতের ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ বা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে অভিযানের প্রমাণ দাখিল করা নিয়ে সরকারের ওপর ক্রমেই চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। সেই সঙ্গে বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপি এই অভিযানকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে। দাবি উঠছে, নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে সন্ত্রাসী ও তাদের ঘাঁটিগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়ার প্রমাণ ভারত সবার সামনে রাখুক। না হলে এই অভিযানের সত্যতা নিয়ে পাকিস্তানের দাবিই প্রাধান্য পাবে।

সেনা অভিযান নিয়ে প্রথম প্রশ্ন গত সোমবার তোলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী এএপি নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল। ‘পাকিস্তানের মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীদের’ শিক্ষা দেওয়ার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে সালাম জানিয়ে বলেছিলেন, অভিযানের ছবি প্রকাশ করে পাকিস্তানের ‘মিথ্যা প্রচার’ নস্যাৎ করা হোক। গতকাল মঙ্গলবার একই কথা আরও জোরালোভাবে প্রথমে বলেন মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় নিরুপম। সামাজিক মাধ্যমে তিনি বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত অবিলম্বে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের প্রমাণ দাখিল করা। এটা না করায় আন্তর্জাতিক মহলে ভারতকে হেয় করেই চলেছে পাকিস্তান।
সঞ্জয়ের মন্তব্যের দায় কংগ্রেস অবশ্য দলীয়ভাবে নেয়নি। দলের যোগাযোগ বিভাগের চেয়ারম্যান রণদীপ সিং সুরযেওয়ালা বলেন, দলের নেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও সহসভাপতি রাহুল গান্ধী সেনা অভিযানকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন।
কেজরিওয়াল ও সঞ্জয় নিরুপমের এই জোড়া দাবির প্রবল বিরোধিতা করেছে বিজেপি। দলের পক্ষ থেকে কেজরিওয়ালের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। শীর্ষ নেতা ও মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ গতকাল বলেন, কেজরিওয়াল ভারতের বীর সেনাদের দক্ষতার প্রতি প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। তিনি পাকিস্তানি প্রচারে গা ভাসিয়েছেন। রবিশঙ্কর এই ‘সন্দেহ–বাতিকদের’ উদ্দেশে বলেন, প্রমাণ দাখিলের মধ্য দিয়ে আপনারা দেশের সেনানীদের মহান নেতৃত্ব, সাহস ও আত্মত্যাগকে অসম্মান করবেন না।
হামলার ছবি নানাভাবে তোলা আছে বলে জানিয়েছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর ডিজিএমও লেফটেন্যান্ট জেনারেল রণবীর সিং। তিনি বলেছিলেন, ‘উপযুক্ত সময়ে’ তা প্রকাশ করা হবে। গতকাল পর্যন্ত তা হয়নি। পাকিস্তান প্রথম দিন থেকেই বলে আসছে, ভারত যা করেছে, তা নিয়ন্ত্রণরেখার ওধার থেকে অন্য সময়ের মতোই গোলাগুলি। তারা সীমান্ত পেরোতে পারেনি।
নিয়ন্ত্রণরেখায় দুই দেশের সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। কাশ্মীরের আখনুর এলাকায় গিগরিয়াল, চাননি ও পালানওয়ালায় গতকাল পাকিস্তান গুলি চালিয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমের খবর। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পর এমন ঘটনা যে ঘটবে, তা তো জানা।
পাকিস্তানকে কূটনৈতিক স্তরে একঘরে করার চেষ্টা ভারত অব্যাহত রেখেছে। সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সুয়েন সুং ভারত সফর করছেন। গতকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তাঁর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। সেখানেও সন্ত্রাসবাদ ও সীমান্ত পারের সন্ত্রাস প্রাধান্য পায়। মোদি বলেন, যাঁরা শান্তি ও মানবতায় বিশ্বাস করেন, তাঁদের সবার এক জোট হয়ে এই বিপদের মোকাবিলা করা উচিত। সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রীও উরি হামলায় নিহত সেনাদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, যাবতীয় সমর্থন নিয়ে তিনি ভারতের পাশে থাকবেন।
Location: Bangladesh

0 comments:

Post a Comment