Tuesday, September 27, 2016

গেইল তাঁরা নন, তবে গেইলের চেয়েও বেশি

‘টি-টোয়েন্টির ফেরিওয়ালা’। শুনলেই সবার আগে মাথায় আসে ক্রিস গেইলের নাম। বিভিন্ন টি-টোয়েন্টি লিগে সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষিত নাম তো ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান এই ওপেনার। গেইলের সঙ্গে সঙ্গে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম কিংবা কেভিন পিটারসেনের নামটিও থাকে সবার আগে। তবে বড় নামগুলো কিন্তু দলগুলোকে সব সময় সাফল্য এনে দিতে পারে না। তাহলে শিরোপা জিতছেন কারা?
যাঁর নামই তুষারঝড়, তিনি যে উইকেটে নেমে ঝড় তুলবেন, তাতে বিস্ময়ের কিছু নেই। বরংবিস্ময়কর হলো, এত বছর ধরে বিভিন্ন টি-টোয়েন্টি লিগে ব্যাটে ঝড় তুলেও কখনো অস্ট্রেলিয়া দলে ডাক পাননি ব্লিজার্ড। ডেভিড ওয়ার্নার ও অ্যারন ফিঞ্চের যুগে জন্ম নেওয়াটাই ভুল ছিল এই বাঁহাতি ওপেনারের। জাতীয় দলে খেলতে না পারার দুঃখটা বিভিন্ন টি-টোয়েন্টি লিগের শিরোপা জয়েই ভোলেন ব্লিজার্ড। ২০০৬–০৭ মৌসুমে ভিক্টোরিয়ার হয়ে প্রথম কোনো শিরোপা জিতেছিলেন। ২০১৫–১৬ মৌসুমের বিগ ব্যাশজয়ী সিডনি থান্ডার দলেও ছিলেন। মাত্র ৯৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেই এখন পর্যন্ত ৮টি ট্রফি জিতেছেন। ব্লিজার্ড শুধু বিগ ব্যাশ টি-টোয়েন্টি কিংবা টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে খেলেছেন ভাবলে ভুল হবে। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের প্রথম শিরোপা জয়ী দলেও ছিলেন, এই দলের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ টি-টোয়েন্টিও জিতেছেন। বাংলাদেশেও খেলে গেছেন ব্লিজার্ড। ২০১০ সালে জাতীয় লিগের টি-টোয়েন্টি পর্বে রাজশাহীর হয়ে নিয়মিতই ঝড় তুলতেন ব্লিজার্ড।
আন্দ্রে রাসেল। ফাইল ছবি

আন্দ্রে রাসেল

আন্দ্রে রাসেলের মতো ব্যাটে-বলে এমন কার্যকর অলরাউন্ডার এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খুব কম। ম্যাচের যেকোনো সময়ে বলকে স্টেডিয়াম পার করা কিংবা বল হাতে ইনিংসের শুরুতে বা শেষ দিকে উইকেট তুলে নেওয়ার জন্য অধিনায়কের অন্যতম ভরসা তো রাসেলই। বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মিলিয়ে মোট ৮টি শিরোপা জিতেছেন রাসেল। ২০১২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়ে শুরু, সর্বশেষ শিরোপাও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০১৬ আসরে। এর মাঝে জিতেছেন আইপিএল, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল), ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (সিপিএল-২ বার), পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল)




 স্যামুয়েল বদ্রি

ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান এই লেগ স্পিনার একটু অন্য রকম। তাঁর সমসাময়িক সব লেগ স্পিনার যেখানে টেস্ট ও ওয়ানডেতে রাজত্ব করছেন, সেখানে স্যামুয়েল বদ্রি শুধু টি-টোয়েন্টিতেই নিজেকে আটকে রেখেছেন। ক্যারিয়ারে এখনো কোনো ওয়ানডে কিংবা টেস্ট খেলেননি। অবশ্য টি-টোয়েন্টি বিশেষজ্ঞ পরিচয়েই সফল তিনি। টি-টোয়েন্টিতে সব মিলিয়ে ৯টি শিরোপা তাঁর। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতা ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুটি দলেই মূল ভরসা হিসেবে ছিলেন বদ্রি। এ ছাড়া ২০০৮ সালের স্ট্যানফোর্ড টি-টোয়েন্টি, সিপিএল (৪ বার), পিএসএল ও চ্যাম্পিয়নস লিগ টি-টোয়েন্টি জিতেছেন ১৪৬টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা বদ্রি। আইসিসির টি-টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিংয়েও শীর্ষ বোলার ৩৫ বছর বয়সী এই লেগ স্পিনার।

 ডোয়াইন ব্রাভো

‘চ্যাম্পিয়ন, চ্যাম্পিয়ন...’—শুধু এই গান গেয়েই থামেননি ডোয়াইন ব্রাভো। টি-টোয়েন্টিতে একের পর শিরোপা জিতেও সেটা প্রমাণ করেছেন। টি-টোয়েন্টিতে ৫ হাজার ৪১ রান ও ৩৪৩ উইকেট। এই পরিসংখ্যানই তো যথেষ্ট ব্রাভোকে চেনাতে। বিশ্বের বিভিন্ন টি-টোয়েন্টি লিগগুলোতে রীতিমতো ‘হট-কেক’ এই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান অলরাউন্ডার। এই বিপুল চাহিদার প্রতিফলন দেখা যায় তাঁর জেতা ট্রফির সংখ্যাতেও দেখা যায়। এখন পর্যন্ত ৯টি টি-টোয়েন্টি শিরোপা জিতেছেন ব্রাভো। দুবার জিতেছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোর মধ্যে সিপিএল, আইপিএল, বিগ ব্যাশ ও চ্যাম্পিয়নস লিগ টি-টোয়েন্টি লিগ সবকিছুই জেতা হয়ে গেছে তাঁর।



কাইরন পোলার্ড

ওই ম্যাচটি নিয়ে নির্ঘাত দুঃস্বপ্ন দেখেন ময়েজেস হেনরিকস। ২০০৯ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগ টি-টোয়েন্টি লিগে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর বিপক্ষে জয় দেখছিল হেনরিকসের দল নিউ সাউথ ওয়েলস। হঠাৎ মঞ্চে আবির্ভাব হলো কাইরন পোলার্ডের। ২৮ বলে ৫৩ রানের কঠিন লক্ষ্যকে মুহূর্তেই মামুলি বানিয়ে ফেললেন তিনি। ১৮ বলে ৫ ছক্কা ও ৫ চারে ৫৪ রান করে ৯ বল বাকি থাকতেই দলকে জিতিয়ে দিলেন পোলার্ড। সেই যে শুরু, এরপর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকে নিজের করে নিয়েছেন পোলার্ড। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে একটি বিশ্বকাপ জিতেছেন। জিতেছেন সিপিএল, আইপিএল, র‍্যাম স্ল্যাম টি-টোয়েন্টি ও চ্যাম্পিয়নস লিগ টি-টোয়েন্টি। সব মিলিয়ে ১০টি শিরোপা নিয়ে ‘টি-টোয়েন্টির ফেরিওয়ালাদের’ মধ্যে সবচেয়ে সফল পোলার্ড। ২৯ বছর বয়সী পোলার্ডের শিরোপা সংখ্যা যে আরও বাড়বে, সেটি নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।
Location: Southern Asia

0 comments:

Post a Comment